240+ আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন – BEST আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস 2026

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি আল্লাহ তাআলার প্রতি ভরসা (তাওয়াক্কুল) রাখা একজন মুমিনের ঈমানের অন্যতম মূল ভিত্তি। আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি দুনিয়ার জীবনে আমরা প্রায়শই বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে হতাশ হই বা মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগি। কিন্তু যারা আল্লাহর উপর দৃঢ় বিশ্বাস ও ভরসা রাখে, তারা সব ধরনের প্রতিকূলতা শান্তভাবে মোকাবিলা করতে পারে। পবিত্র কোরআনের আয়াত এবং হাদিস আমাদের শিখিয়েছে যে, মানুষ হিসেবে আমাদের কাজ হলো সর্বোচ্চ চেষ্টা করা, আর ফলাফলের জন্য একমাত্র আল্লাহর ওপর নির্ভর করা। কারণ, ‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট’ (সূরা তালাক: ৩)। এই পোস্টে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি, কোরআনের আয়াত, হাদিস, অনুপ্রেরণামূলক ক্যাপশন, স্ট্যাটাস এবং দোয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য এবং মানসিক শান্তির চাবিকাঠি। যখন একজন মানুষ উপলব্ধি করতে পারে যে, আসমান ও জমিনের সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ একমাত্র মহান আল্লাহর হাতে, তখন তার মন থেকে দুনিয়াবি ভয় ও দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। নবী-রাসূলগণ (আলাইহিমুস সালাম) তাদের জীবনের কঠিনতম মুহূর্তেও আল্লাহর উপর ভরসা রেখেছেন এবং অবিশ্বাস্যভাবে সাহায্য লাভ করেছেন। আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি যেমন, ইবরাহীম (আ.) যখন আগুনে নিক্ষিপ্ত হচ্ছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন— “হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল” (আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, আর তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক!)। এই প্রবন্ধটি আপনাকে আল্লাহর প্রতি আপনার বিশ্বাস ও ভরসা আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করবে।

আমরা এখানে আল্লাহর উপর ভরসা করার ফজিলত, এটি করার সঠিক পদ্ধতি, এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন জ্ঞানী ও ইসলামিক ব্যক্তিত্বের মূল্যবান উক্তি তুলে ধরব। এছাড়াও আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করার জন্য সেরা কিছু আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে ক্যাপশনস্ট্যাটাস প্রদান করা হবে। যদি আপনি মনে করেন আপনার জীবনে শান্তি ও স্থিরতার অভাব রয়েছে, তবে আপনার আল্লাহর উপর ভরসা বাড়ানোর জন্য এখানে বর্ণিত দোয়া ও আমলগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন ও মেনে চলুন। এমনকি যারা আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস এ খুঁজছেন, তাদের জন্যও কিছু বিশেষ উদ্ধৃতি এখানে রয়েছে।

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি

240+ আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন - আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস 2026

যখন আপনার ভরসার পাত্র হন মহান আল্লাহ, তখন পৃথিবীর কোনো শক্তি বা ষড়যন্ত্রই আপনার চূড়ান্ত ক্ষতি করতে পারে না। তিনি আপনার জন্য যা নির্ধারণ করেছেন, তা অবশ্যই ঘটবে।

তাওয়াক্কুল (ভরসা) হলো হৃদয়ের সেই প্রশান্তি, যা আপনাকে বিপদের মাঝেও স্থির রাখে। কারণ আপনি জানেন, আপনার সবকিছুর দায়িত্ব এমন একজন নিয়েছেন, যিনি কখনোই পরাজিত হন না।

প্রকৃত ভরসা সেটাই, যখন আপনি আপনার সাধ্যের সবটুকু চেষ্টা করেছেন এবং এরপর ফলাফল কী হবে, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে শান্তচিত্তে আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর সন্তুষ্ট থেকেছেন।

মানুষের ওপর ভরসা করলে তা প্রায়শই হতাশায় পরিণত হয়, কারণ মানুষ সীমাবদ্ধ ও পরিবর্তনশীল। কিন্তু আল্লাহর ওপর ভরসা করলে তা কখনো বৃথা যায় না, কারণ তিনি অসীম, চিরঞ্জীব ও ওয়াদা পালনকারী।

আল্লাহর উপর ভরসা মানে এই নয় যে, আপনি হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন। বরং এর অর্থ হলো— আপনি ঈমানের সাথে আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন এবং বিশ্বাস রাখবেন যে, আপনার চেষ্টার উত্তম ফল তিনিই দান করবেন।

জীবনের কঠিনতম মুহূর্তে, যখন কোনো পথ খোলা থাকে না, তখন আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। তিনি এমন জায়গা থেকে আপনার জন্য পথ তৈরি করে দেবেন, যা আপনি কখনো কল্পনাও করতে পারেননি।

ভরসা হলো একটি ঢাল। এটি হয়তো আপনার দিকে বিপদ আসা বন্ধ করবে না, কিন্তু এটি আপনাকে বিপদের আঘাতে ভেঙে পড়া থেকে নিশ্চিতভাবে রক্ষা করবে।

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস

240+ আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন - আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস 2026

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা যদি আল্লাহর ওপর যথাযথভাবে ভরসা করতে, তবে তিনি তোমাদেরকে পাখির মতো রিজিক দান করতেন। পাখিরা সকালে খালি পেটে বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে।” (সুনানে তিরমিযী)

নবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহই তার সকল কাজ ও দুশ্চিন্তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।” (হাদিসের সারমর্ম)

এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি আমার উটটি বেঁধে রেখে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করব, নাকি তা ছেড়ে দিয়ে তাওয়াক্কুল করব?” রাসূল (সা.) বললেন, “আগে তা বাঁধো, অতঃপর তাওয়াক্কুল করো।” (সুনানে তিরমিযী)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে: ‘বিসমিল্লাহি, তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, তাকে বলা হয়: তোমাকে হেদায়েত দেওয়া হলো, তোমাকে রক্ষা করা হলো এবং তোমার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা করা হলো।” (সুনানে আবু দাউদ)

নবী (সা.) বলেছেন, “আমার উম্মতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হলো সেইসব লোক, যারা (কুসংস্কারবশত) ঝাড়ফুঁক করায় না, পাখি উড়িয়ে ভাগ্য পরীক্ষা করে না এবং তারা কেবল তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা করে।” (সহীহ বুখারী)

রাসূল (সা.) শিখিয়েছেন, যখন ইবরাহীম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, “হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল” (আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক)। (সহীহ বুখারী)

একটি হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আমি আমার বান্দার প্রতি তেমনই, যেমন সে আমার প্রতি ধারণা রাখে। সে যখন আমাকে স্মরণ করে, আমি তার সাথে থাকি।” (সহীহ বুখারী)

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে ক্যাপশন

আমার চেষ্টা সীমিত, কিন্তু আমার রবের রহমত অসীম। তাঁর ওপরই আমার সকল ভরসা। 🤍

ফলাফল যাই হোক, আলহামদুলিল্লাহ! কারণ আমি জানি আমার আল্লাহ আমার জন্য সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী।

আমি আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করি, বাকিটা আমার রবের হাতে সঁপে দিই। তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট। ✨

যখন ভরসার স্থল হয় ‘আল্লাহ’, তখন হতাশা বা ভয় কোনোটিই আমাকে স্পর্শ করতে পারে না।

আমার পরিকল্পনা ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা কখনো ব্যর্থ হয় না। তাঁর ওপর পূর্ণ আস্থা আছে। 🤲

চিন্তা নয়, ভরসা রাখুন। যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি আপনার প্রয়োজনও পূরণ করবেন।

আমার শক্তি আমার প্রচেষ্টায় নয়, আমার শক্তি আমার রবের ওপর ভরসায় নিহিত।

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে স্ট্যাটাস

240+ আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন - আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস 2026

জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে শুধু নিজের শক্তি বা বুদ্ধিমত্তার ওপর নির্ভর করবেন না। আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন, আর ফলাফলের জন্য সেই মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন, যিনি আসমান ও জমিনের সবকিছুর একচ্ছত্র মালিক। বিশ্বাস করুন, তিনি আপনার চেষ্টার উত্তম প্রতিদান দেবেনই।

যখন মনে হয় জীবনের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে, তখন হতাশ হবেন না। ধৈর্য ধরুন আর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করুন। তিনি এমন সব অকল্পনীয় পথ খুলে দেন, যা আমাদের ধারণারও বাইরে। তিনি তো সেই সত্তা, যিনি উত্তাল সাগরের বুক চিরেও পথ তৈরি করতে সক্ষম।

তাওয়াক্কুল মানে অলসতা নয়। তাওয়াক্কুল হলো— নিজের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে পরিশ্রম করার পর শান্ত হৃদয়ে আল্লাহর ফয়সালার জন্য অপেক্ষা করা। এই বিশ্বাস রাখা যে, তিনি আমার জন্য যা নির্বাচন করবেন, তা-ই আমার জন্য কল্যাণকর, যদিও তা আমার চাওয়ার বিপরীতে হয়।

রিজিক নিয়ে কখনো দুশ্চিন্তা করবেন না। যিনি আপনাকে মাতৃগর্ভে রিজিক দিয়েছেন, তিনি এই পৃথিবীতেও আপনার রিজিকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আপনার কাজ শুধু হালাল পথে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আর তাঁর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা। তিনি অবশ্যই আপনাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা আপনি ভাবতেও পারেননি।

মানুষের কাছে কিছু চেয়ে লজ্জিত হওয়ার চেয়ে আল্লাহর কাছে চেয়ে ধৈর্য ধারণ করা অনেক সম্মানের। মানুষ আপনার প্রয়োজন পূরণে ব্যর্থ হতে পারে, কিন্তু আপনার রব কখনোই আপনাকে খালি হাতে ফেরান না। শুধু ভরসা রাখুন, তিনি সঠিক সময়ে আপনার দু’আ কবুল করবেন।

আপনার জীবনের কঠিন সময়গুলো আল্লাহর ওপর ভরসা রাখার পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় হতাশ না হয়ে যদি আপনি বলতে পারেন, “আমার রব আমার সাথেই আছেন, তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট”, তবে জেনে রাখুন, আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে।

দুনিয়াতে আমরা সবাই কোনো না কোনো কিছুর ওপর ভরসা করি— টাকা, ক্ষমতা বা সম্পর্কের ওপর। কিন্তু এসবই ক্ষণস্থায়ী। একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসাই চিরন্তন। যিনি আল্লাহর ওপর ভরসা করেন, তিনি কখনো একা নন, কখনো পরাজিত নন।

আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ভরসা নিয়ে উক্তি

240+ আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন - আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে হাদিস 2026

বিশ্বাস (ঈমান) হলো আল্লাহর অস্তিত্ব ও ক্ষমতাকে জানা। আর ভরসা (তাওয়াক্কুল) হলো সেই জ্ঞানকে হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে তাঁর ওপর পূর্ণ নির্ভর করা।

আল্লাহর উপর বিশ্বাস হলো একটি গাছের বীজের মতো, আর ভরসা হলো সেই বীজ থেকে গজানো সুশীতল ছায়াদানকারী বৃক্ষ। বিশ্বাস ছাড়া ভরসা অকল্পনীয়।

বিশ্বাস আপনাকে সঠিক পথ দেখায়, আর ভরসা আপনাকে সেই পথে চলার শক্তি জোগায়। বিশ্বাস হলো জ্ঞানের আলো, আর ভরসা হলো সেই আলোর প্রতিচ্ছবিতে পথচলার দৃঢ়তা।

আপনি আল্লাহর ওপর ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ভরসা করতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে— তিনি সর্বজ্ঞ, তিনি সর্বশক্তিমান এবং তিনি আপনার প্রতি পরম দয়ালু।

বিশ্বাস হলো এটা জানা যে, আল্লাহ সব করতে পারেন। আর ভরসা হলো এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা যে, তিনি আমার জন্য যা ভালো, ঠিক তা-ই করবেন, যদিও আমি তা বুঝতে না পারি।

ঈমান ও তাওয়াক্কুল একে অপরের পরিপূরক। যার ঈমান যত মজবুত, আল্লাহর ওপর তার ভরসাও তত অটুট। বিপদের ঝড় তাকে দুর্বল করতে পারে না।

বিশ্বাস হলো আল্লাহর ওয়াদার প্রতি আস্থা রাখা, আর ভরসা হলো সেই আস্থার ভিত্তিতে নিজের জীবনকে পরিচালিত করা, এমনকি যখন পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকে।

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে কোরআনের আয়াত

“আর যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর কাজ পূরণকারী।” (সূরা আত-তালাক, ৬৫:৩)

অতঃপর যখন তুমি কোনো সংকল্প করবে (দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেবে), তখন আল্লাহর উপর ভরসা করবে। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ (তাঁকে) ভালোবাসেন যারা তাঁর উপর ভরসা করে।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:১৫৯)

“মুমিন তো তারাই, যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণে কেঁপে ওঠে… এবং তারা কেবল তাদের রবের উপরই ভরসা করে।” (সূরা আল-আনফাল, ৮:২)

“আর ভরসা করো সেই চিরঞ্জীব সত্ত্বার (আল্লাহর) ওপর, যিনি কখনো মৃত্যুবরণ করবেন না।” (সূরা আল-ফুরকান, ২৫:৫৮)

“যদি আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেন, তবে তোমাদের উপর বিজয়ী হওয়ার কেউ থাকবে না। আর যদি তিনি তোমাদের ত্যাগ করেন, তবে এমন কে আছে যে, তাঁর পর তোমাদের সাহায্য করবে? সুতরাং, মুমিনদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:১৬০)

“ইবরাহীম বলেছিল… ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে।'” (সূরা আল-মুমতাহিনা, ৬০:৪)

আমার সফলতা তো আল্লাহরই সাহায্যে। আমি তাঁর উপরই ভরসা করি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী।” (সূরা হুদ, ১১:৮৮)

আল্লাহর উপর ভরসা করার দোয়া

“حَسْبِيَ اللّٰهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ।”

অর্থ: আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। আমি তারই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আর তিনিই মহা আরশের রব।) (সকালে ও সন্ধ্যায় ৭ বার পাঠ করার জন্য হাদিসে উৎসাহিত করা হয়েছে।

“بِسْمِ اللَّهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ، وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ।

(অর্থ: আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি), আমি আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই।) (ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পড়ার দোয়া।)

“حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ।

(অর্থ: আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক।) (যেকোনো বিপদ বা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ার জন্য।)

“رَبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ।

(অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে।) (কোরআনে বর্ণিত ইবরাহীম (আ.) ও তাঁর অনুসারীদের দোয়া।)

“يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ، أَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ، وَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ।

(অর্থ: হে চিরঞ্জীব, হে সবকিছুর ধারক! আমি আপনার দয়ার মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আপনি আমার সকল বিষয়কে সংশোধন করে দিন এবং এক মুহূর্তের জন্যও আমাকে আমার নিজের ওপর ছেড়ে দেবেন না।)

“اللَّهُمَّ لاَ سَهْلَ إِلاَّ مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً، وَأَنْتَ تَجْعَلُ الْحَزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلاً।

(অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি যা সহজ করেন তা ছাড়া কোনো কিছুই সহজ নয়। আর আপনি যখন ইচ্ছা করেন, তখন কঠিন কাজকেও সহজ করে দেন।) (কঠিন কাজে আল্লাহর ওপর ভরসা করে পড়ার দোয়া।)

“…وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ ۚ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ।

(অর্থ: …আমার সফলতা তো আল্লাহরই সাহায্যে। আমি তাঁর উপরই ভরসা করি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী।) (কোরআনে বর্ণিত শূ’আইব (আ.)-এর উক্তি ও দোয়া।)

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে উক্তি English

Tawakkul is not passively waiting. It’s actively working with your hands, while your heart is fully reliant on Allah.

Trusting Allah doesn’t mean your path will always be easy. It means you are certain that whatever path Allah chooses for you, it is the best one.

When you have Tawakkul, you don’t worry about how Allah will solve your problem. You just have a firm belief that He will solve it.

Worrying means you trust your own strength. Tawakkul means you trust Allah’s infinite power. Choose Tawakkul and find peace.

He who relies on Allah, Allah is sufficient for him. That’s the only assurance you ever need in this life.

Tawakkul is realizing that the ultimate planner is not you, but the One who created you. So submit your plans to His divine plan.

The moment you stop worrying and start trusting Allah, amazing things begin to happen. Your job is to try, His job is to make it happen.

উপসংহার

আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা (তাওয়াক্কুল) একজন মুমিনের জীবনের অপরিহার্য অংশ। এই প্রবন্ধে আমরা দেখলাম যে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ভরসা রাখা শুধু একটি ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং এটি আমাদের মানসিক শান্তি, ধৈর্য ও স্থিতিশীলতা অর্জনের মূলমন্ত্র। আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করার পর সবকিছুর চূড়ান্ত ফলাফল আল্লাহর উপর ছেড়ে দেওয়াই হলো তাওয়াক্কুল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, সেটা হোক রিজিকের চিন্তা, স্বাস্থ্য, বা কোনো কঠিন পরীক্ষা— যখন আমরা “যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট” এই বাণীতে বিশ্বাস স্থাপন করি, তখন আমাদের সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। তাই আসুন, আমরা আমাদের প্রতিটি কাজে আল্লাহর সাহায্য চাই এবং পূর্ণ তাওয়াক্কুল নিয়ে জীবনযাপন করি। ইনশাআল্লাহ, এর ফলস্বরূপ আল্লাহ আমাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণের দ্বার উন্মুক্ত করে দেবেন।

অন্য পোস্ট পড়ুন-

 ইসলামিক ক্যাপশন ইংলিশ বাংলা

 ইসলামিক স্ট্যাটাস

অফলাইন পিক

 বেকার ছেলেদের কষ্টের স্ট্যাটাস

ইসলামিক স্ট্যাটাস পিকচার 

 জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস

 ইমোশনাল স্ট্যাটাস বাংলা

 ইসলামিক বোরকা পরা প্রোফাইল পিক 

আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ আয়াত কোনটি?

সূরা তালাকের ৩ নম্বর আয়াতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ: “আর যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।” (وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ)

আল্লাহর উপর ভরসা করার দোয়া কোনটি?

অন্যতম একটি দোয়া হলো: “حَسْبِيَ اللّٰهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ” (হাসবি-ইয়াল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লাহু- আলাইহি তাওয়াক্কুলতু ওয়া-হুয়া রাব্বুল- আরশিল আজিম)।

আল্লাহর উপর ভরসা করলে রিজিকের কী নিশ্চয়তা রয়েছে?

হাদিসে এসেছে, “তোমরা যদি সঠিকভাবে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে, তবে তিনি তোমাদেরকে রিজিক দান করতেন, যেমন পাখিকে রিজিক দান করে থাকেন। তারা সকালে খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে।” (তিরমিজি)

আল্লাহর উপর ভরসা না করলে কী হয়?

আল্লাহর উপর ভরসা না করলে মানুষ দুর্বল, হতাশ ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে সে আল্লাহ ছাড়া অন্যদের কাছে সাহায্য চাইতে পারে, যা এক প্রকার শিরকের দিকে ধাবিত করতে পারে।